দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাসায় কাজ করা এই পিয়ন হলেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেন এবং বর্তমানে কোথায় আছেন, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা।
রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, তাঁর বাসার পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার বাসায় কাজ করে গেছে, সেই পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। সে হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। আমি যখন জানলাম সঙ্গে সঙ্গে তাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি। তার কার্ড-টার্ড সব বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছি।”
জাহাঙ্গীর আলম শেখ হাসিনার বাসায় ‘কাজের লোক’ হিসেবে পরিচিত হন। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা বিরোধীদলে থাকার সময় ‘সুধা সদনে’ কাজ করতেন এবং প্রোগ্রামের জন্য খাবার পানি বহন করতেন। এজন্য তিনি ‘পানি জাহাঙ্গীর’ নামে পরিচিতি পান।
জাহাঙ্গীর আলম বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেন। তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করা হয় যে, তিনি ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, বাড়ি, জমি, এবং গাড়ির মালিক। তার স্ত্রী কামরুন নাহার এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবগুলোও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাহাঙ্গীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আসনে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর জাহাঙ্গীর আলম লাপাত্তা হয়ে গেছেন। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তিনি যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পিয়ন জাহাঙ্গীর আলমের ৪০০ কোটি টাকার অবৈধ উপার্জনের খবর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তার বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার কাহিনী এবং বর্তমান অবস্থান নিয়ে এখনও চলছে আলোচনা। তদন্তের মাধ্যমে এই সম্পদের প্রকৃত উৎস বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।